চট্টগ্রামের মোহরায় ধর্ষণ চেষ্টার ঘটনায় পুলিশ নিল মারামারি মামলা

মোহরায় ডিম ভাত খাওয়ার লোভ দেখিয়ে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে বুধবার (১১ জানুয়ারি) বেলা ১টার দিকে মোহরার বাণী মিলন সংঘের তালতলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

Nagad

অভিযুক্ত হাবীব ওই এলাকার একটি বাড়ির দারোয়ান হিসেবে কাজ করে। সেই বাড়িতেই মাকে নিয়ে থাকে।

ভিকটিম শিশুটির পরিবার বলছে— দীর্ঘ সময় ধরে শিশুটিকে দেখতে না পেয়ে খুঁজতে বের হন তার নানা। আশপাশের সব বাসার মতো হাবীবের বাসায়ও খোঁজ নিতে যায় তারা। সেখানে হাবীবের মা দেখেনি বলে জানালে ফিরে যাওয়ার সময় জানালা দিয়ে হাবীবের শরীরে রক্ত দেখতে পেয়ে শিশুটির নাম ধরে ডাকাডাকি করেন স্বজনেরা। ওই সময় শিশুটি ভেতর থেকে সাড়া দেয়। সেসময় শিশুটি জানায় ‘ডিমভাত’ খাওয়ানোর নাম করে তাকে রুমের ভেতরে নিয়ে যায় হাবীব। এসময় তার সঙ্গে খারাপ আচরণ করলে সে তাতে বাধা দেয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে হাবীব শিশুটির চুল ধরে সজোরে দেওয়ালে মাথা চেপে ধরায় তার মুখের ডান পাশ ও চোখের উপরিভাগে আঘাত লাগে। পরে স্থানীয়রা হাবীবকে হাতেনাতে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়।

তবে পুলিশের দাবি, ‘শিশুটিকে ধর্ষণচেষ্টা করা হয়নি। অভিযুক্ত ব্যক্তি মাতাল ছিল। তাকে মদ্যপানে বাধা দেওয়ায় শিশুটিকে দেওয়ালের সঙ্গে চেপে ধরা হয় তাতেই তার মুখের একপাশ থেতলে যায়। তাই মামলাটি মারামারির মামলা হিসেবে রেকর্ড করা হয়েছে।’

ভুক্তভোগী শিশুটির মা বলেন, ‘আমি কাজে গিয়েছিলাম। পরে আমার বাবা আমাকে কল দিয়ে জানালে আমি চলে আসি। এসময় আমার মেয়েকে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখতে পাই। ওই অপরাধীকে পুলিশ নিয়ে গেছে। রাতে থানায় মামলা করা হয়েছে। পুলিশ মারামারির মামলা হিসেবে রেকর্ড করেছে।’

শিশুটির নানা জানান, নাতনীকে না পেয়ে এদিক-সেদিক খুঁজতে থাকেন। যেই বাসায় তার নাতনীকে নিয়ে গেছে সেই বাসায় গিয়েও খোঁজ নেওয়া হয়। সেখানে হাবীবের বৃদ্ধ মা ছিল। তাকে জিজ্ঞেস করলে সেও জানে না এবং শিশুটিকে দেখেনি বলে জানায়। পরে ওই বাসার জানালা দিয়ে দেখা যায় হাবীবের পড়নের কাপড়ে রক্ত। এসময় আতঙ্কিত হয়ে নাতনীর নাম ধরে ডাক দিলে শিশুটি ভেতর থেকে আওয়াজ দেয়। নাতনীর আওয়াজ শুনে দ্রুত ঘরের ভেতরে গিয়ে দেখেন শিশুটির ডান চোখের উপরিভাগে জখম হয়ে আছে আর রক্ত ঝরছে সেইসঙ্গে তার পরনের প্যান্টও খোলা ছিল। এসময় হাবীব তাকেও লোহার রড দিয়ে আঘাত করার চেষ্টা করে। পরে স্থানীয়রা ঘটনাস্থলে গিয়ে অপরাধীকে হাতেনাতে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়।

প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ‘হাবীব শিশুটিকে ডিমভাত খাওয়ানোর কথা বলে ফুঁসলিয়ে তার বাসায় নিয়ে যায়। বাসায় তার বৃদ্ধ মা ছাড়া কেউ থাকেনা। সেই সুযোগে শিশুটিকে নিয়ে গিয়ে অনৈতিক কাজ করতে চেয়েছিল। তবে ধর্ষণচেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে শিশুটিকে আঘাত করে। ঘটনার সময় আমরা তার বাসায় গেলে একটি টেবিলের উপর অনেকগুলো ছুরি দেখতে পাই।’ ওই অভিযুক্তের বাসায় রাতে নিয়মিত মদ-জুয়ার আসর বসতো বলেও জানান তিনি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে চান্দগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মঈনুর রহমান চট্টলার কণ্ঠকে  বলেন, ‘ধর্ষণের কোনো চেষ্টা করা হয়নি। মারামারি হয়েছে, মাথা ফাটিয়ে দিয়েছে। অভিযুক্ত ব্যক্তিটি মাতাল ছিল, শুধু মাতাল নয় পুরোটাই মাতাল ছিল। সোজা হয়ে দাঁড়ানোর অবস্থায় ছিল না। সে আসলেই খারাপ; সারাদিন মদ খেয়ে পড়ে থাকে। সে চুরির সঙ্গেও জড়িত।’

তার ঘরে রাতে নিয়মিত মদ-জুয়ার আসর বসে— এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘না, এ ধরনের কোনো তথ্য পাইনি এবং কেউ আমাদেরকে বলেও নাই।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn

সর্বশেষ খবর

সাম্প্রতিক