‘বিচারিক ক্ষমতা’ চায় বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। দেশের উচ্চশিক্ষার দেখভালকারী এ প্রতিষ্ঠানটি বর্তমানে সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সরকারের নির্দেশে তদন্ত কার্যক্রম চালানো ও মনিটর করতে পারে।
তবে সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে তারা কেবল শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে সুপারিশ করতে পারে। প্রতিষ্ঠানটির আইনগত কর্তৃত্ব ও ক্ষমতা বৃদ্ধি করে ‘উচ্চশিক্ষা কমিশন’ গঠনের জন্য দীর্ঘদিন আলোচনা চললেও তা আর এগোয়নি। এ অবস্থায় সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর নানা অনিয়ম বন্ধ করতে তদন্তের পাশাপাশি সরাসরি পদক্ষেপ নিতে নিজেদের বিচারিক ক্ষমতা চেয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে সুপারিশ করেছে।গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে কমিশনের চেয়ারম্যান ও সদস্যরা ইউজিসির ৪৮তম বার্ষিক প্রতিবেদন তুলে দেন। সেখানেই এই ক্ষমতা চেয়ে সুপারিশ করা হয়েছে। কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. কাজী শহীদুল্লাহ এ প্রতিবেদন রাষ্ট্রপতির হাতে তুলে দেন। প্রতিবেদনে উচ্চশিক্ষার মান উন্নয়নে উপাচার্য নিয়োগে নীতিমালা প্রণয়ন, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ক্ষেত্রে বয়স ও সময়ের বাধ্যবাধকতা শিথিল করা, অভ্যন্তরীণ র্যাঙ্কিং ব্যবস্থা চালু করাসহ ১৭টি সুপারিশ করা হয়েছে।
ইউজিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, সাম্প্রতিক সময়ে দেশে উচ্চশিক্ষার ব্যাপক বিস্তৃতি ও সম্প্রসারণ ঘটেছে। তাই নৈতিক মূল্যবোধসম্পন্ন দক্ষ জনশক্তি তৈরি ও আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন শিক্ষা নিশ্চিত করতে প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘একাডেমিক মাস্টার প্ল্যান’ করা জরুরি।বিশ্বমানের উচ্চশিক্ষা নিশ্চিত করতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর দেশীয় বা জাতীয় র্যাঙ্কিং করারও সুপারিশ করেছে ইউজিসি। সংস্থাটি বলেছে, আন্তর্জাতিক র্যাঙ্কিং ব্যবস্থার আদলে দেশের আর্থসামাজিক অবস্থা বিবেচনায় নিয়ে এই ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে। সনদ জালিয়াতি প্রতিরোধ করতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় ‘ব্লক চেইন প্রযুক্তি’ ব্যবহার চালু করার পরামর্শ দিয়েছে ইউজিসি।
এ ছাড়া উন্নত বিশ্বের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মতো দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অসচ্ছল শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষাঋণ কর্মসূচি চালু করা; বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর চলমান সান্ধ্য, উইকেন্ড, এক্সিকিউটিভ ইত্যাদি নামে চলা কোর্সগুলো বন্ধ করাসহ আরও কিছু সুপারিশ করেছে ইউজিসি।
প্রতিবছরই ইউজিসির বার্ষিক প্রতিবেদনে কিছু সুপারিশ করা হয়। কিন্তু অধিকাংশ সুপারিশ সরকার বাস্তবায়ন করে না বলে অভিযোগ আছে। এমন অবস্থায় এবার নতুন কিছু সুপারিশ করল ইউজিসি