চট্টগ্রাম নগরীর পাঁচলাইশ থানাধীন ষোলশহর এলাকার হেলে পড়া ভবনটিকে ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ ঘোষণা করেছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) আর ‘পরিত্যক্ত’ ঘোষণা করে খালি করেছে ফায়ার সার্ভিস।
নগরীর চশমা খাল লাগোয়া চারতলা ফেরদৌস প্লাজা নামের ভবনটি গতকাল মঙ্গলবার (১৮ জানুয়ারি) দুপুরে হেলে পড়ার খবর পাওয়া যায়। বিকালে ভবনটি ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ ঘোষণা করে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ সিডিএ।
প্রায় ১০ দিন আগে ওই ভবনের একাংশ জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের আওতায় খাল সম্প্রসারণের জন্য ভেঙে ফেলা হয়েছিল।
ফোনালাপে ফায়ার সার্ভিসের বায়েজিদ স্টেশনের সিনিয়র স্টেশন অফিসার কবীর হোসেন চট্টলার কণ্ঠকে বলেন, “ভবনটিকে পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। বেশ কয়েক জায়গায় ফাটলও দেখা গেছে। এটি যেভাবে হেলে আছে, তাতে যেকোনো সময় আপনাআপনি ভেঙে পড়তে পারে। এটি ভেঙে ফেলতে হবে। সব লোকজন ও মালামাল বের করে দিয়ে সন্ধ্যায় আমরা কাজ শেষ করেছি।”
ওই ভবনে কিছু দোকান ও প্রতিষ্ঠানের কার্যালয় ছিল। ভবনটির লাগোয়া চশমা খালে জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের কাজ চলছে। প্রকল্পের আওতায় খালের ওই অংশে প্রতিরক্ষা দেয়াল নির্মাণ করা হচ্ছে।
ভবন মালিক খোরশেদ আলমের দাবি খালে দেয়াল নির্মাণের জন্য করা খনন কাজের ফলে ভবনটি হেলে গেছে। এ প্রতিবেদক এর মাধ্যমে তিনি সরকারের কাছে ক্ষতিপূরণের দাবি জানান।
খোরশেদ চট্রলার কন্ঠকে আরো জানান, তাদের পরিবারের মালিকানাধীন ভবনটি ১৯৯০ সালে নির্মাণ করা হয়। এর চার বছর আগে নকশা অনুমোদন করা হয়েছিল। ভবনের একাংশ ১০ দিন আগে ভাঙা হয়েছে জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের কাজের জন্য। এখন অবশিষ্ট অংশও হেলে গেছে। এখন সিডিএ’র পরামর্শে পরবর্তী করণীয় ঠিক করা হবে।
চারতলা ভবটির নিচতলায় দোকান, দোতলায় দাঁতের চিকিৎসকের চেম্বার, তিনতলায় তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র এবং চার তলায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের ৩৫তম ব্যাচের একটি কার্যালয় রয়েছে।
মঙ্গলবার ওইসব প্রতিষ্ঠানের লোকজন সেখানে কাজ করে। তাদের দাবি মঙ্গলবারও ভবনটি ঠিক ছিল। বুধবার সকালে দোকান ও প্রতিষ্ঠান খুলতে গিয়ে তারা দেখতে পান ভবনটি হেলে আছে।
দুপুর ১টার দিকে গিয়ে দেখা যায়, ভবনটির মেঝেতে কয়েকটি অংশে ফাটল দেখা দিয়েছে। হেলে থাকা ভবন দেখতে স্থানীয়রা আশেপাশে ভিড় করছিল। পরে ভবনের ভেতরে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে থাকা জিনিসপত্র সরিয়ে নেওয়া হয়।
নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে মেগা প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)। এর আগে ২০২১ সালের ডিসেম্বরে নগরীর সদরঘাট থানাধীন মাঝিরঘাট স্ট্যান্ড রোড সংলগ্ন পার্বতী ফকিরপাড়া এলাকায় খননের সময় গুলজার খাল সংলগ্ন তিনতলা ও দোতলা ভবন দুটি হেলে পড়ে। পরে ভবন দুটি ভেঙে ফেলা হয়েছিল।