নিউজডেস্ক চট্রলার কণ্ঠ।”
বিদ্রোহী কবি” বিশিষ্ট সংগীতশিল্পী ও বাংলাদেশের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের কনিষ্ঠ পুত্রবধূ কল্যাণী কাজী গতকাল শুক্রবার ভোরে কলকাতায় ইন্তেকাল করেছেন (ইন্নালিল্লাহে… রাজেউন)। তার বয়স হয়েছিল ৮৭ বছর। তিনি জাতীয় কবির ছোট ছেলে কাজী অনিরুদ্ধের স্ত্রী। কবি পরিবারের দ্বিতীয় প্রজন্মের তিনি ছিলেন শেষ সদস্য। তিনি ক্যানসারে ভূগছিলেন। ৪–৫দিন আগে কলকাতার পিজি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই চিকিৎসা চলাকালীন গতকাল শুক্রবার ভোর ৫টা ৪৫ মিনিটে মৃত্যুবরণ করেন। কল্যাণী কাজীর ইন্তেকালে শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এক শোক বার্তায় তিনি বলেন, বিখ্যাত নজরুল গীতি শিল্পীর মৃত্যুতে সঙ্গীত জগতের এক অপূরণীয় ক্ষতি হলো। প্রধানমন্ত্রী শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান। আরও শোক প্রকাশ করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, তাঁর প্রয়াণে সংগীতজগতে এক অপূরণীয় ক্ষতি হলো। তিনি কল্যাণী কাজীর আত্মীয়স্বজন ও অনুরাগীদের সমবেদনা জানান।
কাজী নজরুল ইসলাম একাডেমির উপদেষ্টা পরিষদের সভাপতি ছিলেন কল্যাণী কাজী। নজরুলের গানে তার অবদানের জন্য ২০১৫ সালে ‘সংগীত মহাসম্মান’ পুরস্কারে ভূষিত করে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। ১৮ বছর বয়সে পুত্রবধূ হয়ে ওই সংসারে আসার পর খুব কাছ থেকে দেখেছেন কাজী নজরুল ইসলামকে। কবির জীবদ্দশায় যারা তাকে অত্যন্ত ঘনিষ্ঠভাবে দেখার সুযোগ পেয়েছেন, তাদের একজন হলেন তাঁর পুত্রবধু কল্যাণী কাজী। পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে দেখার অভিজ্ঞতা নিয়ে লিখেছেন ‘অন্তরঙ্গ অনিরুদ্ধ’ শিরোনামে। বইটির শুরুতে উঠে এসেছে কল্যাণী কাজীর বাল্য জীবনের কথা।
১৯৫২ সালের অক্টোবর মাসে রাঁচিতে বেড়াতে গিয়ে অপ্রত্যাশিতভাবেই কাজী অনিরুদ্ধর সঙ্গে তার প্রথম আলাপের স্মৃতি। কল্যাণী কাজীর স্মৃতিচারণায় উঠে এসেছে প্রণয়ের সেই দিনগুলি। এই বই কাজী অনিরুদ্ধর প্রতি তার পরিবারের এক বিনম্র শ্রদ্ধাঞ্জলি। এছাড়া রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে নজরুলের ঘনিষ্ট সম্পর্ক নিয়ে রবি পরিক্রমাও লিখছেন তিনি। উল্লেখ্য, তাঁর স্বামী কবির কনিষ্ঠপুত্র গিটারবাদক কাজী অনিরুদ্ধ ২২ ফেব্রুয়ারি ১৯৭৪ সালে মারা যান।