কক্সবাজারে স্বাভাবিক হচ্ছে জীবনযাত্রা

রহিম উল্লাহ উপল, কক্সবাজার প্রতিনিধি।  ঘূর্ণিঝড় মোখার তান্ডবের পর কক্সবাজারের জীবনযাত্রা স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। নোঙর করা বোটগুলো মাছ ধরতে সাগরমুখি হয়েছে। গতকাল সকাল থেকে শুরু হয়েছে বিমান চলাচলও। উপকূলীয় এলাকায় ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িঘর, রাস্তাঘাট মেরামত ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ চলছে। ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ ও ক্ষয়ক্ষতির তালিকা তৈরির কাজ করছে জেলা প্রশাসন।
এদিকে জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরানের নেতৃত্বে একটি টিম বেশী ক্ষতিগ্রস্ত সেন্টমার্টিন পরিদর্শন করেছেন। এ সময় তার সাথে ছিলেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক এডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা, জেলা সভাপতি এডভোকেট ফরিদুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক মেয়র মুজিবুর রহমান, জেলার শীর্ষ নেতা রেজাউল করিম প্রমুখ।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মোখার তান্ডবের পর গত রবিবার রাতেই আশ্রয়কেন্দ্র থেকে বাড়ি ফিরে গেছেন দুর্গত মানুষ। ঘরে ফিরেই দুর্ভোগে পড়েন অনেকেই। ঘূর্ণিঝড়ে পাকা দালান ঘরের ক্ষতি না হলেও ক্ষতি হয়েছে কাঁচা ও ঝুপড়ি ঘরগুলোর। বেশিরভাগ ঘরের টিন, চালা, ঘেরাবেড়া উড়ে গেছে। বিশেষ করে কক্সবাজারের টেকনাফ ও সেন্টমাটিন বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেন্টমাটিনে অনেক ঘর বাতাসে উড়ে গেছে। অনেকেই বাড়িঘর হারিয়ে এখন নিঃস্ব। ক্ষতিগ্রস্ত এসব মানুষ বাড়িঘর মেরামত করে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছেন। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে উখিয়া ও টেকনাফের রোহিঙ্গাক্যাম্পও। ক্ষতিগ্রস্তরা গতকাল পর্যন্ত সরকারিভাবে কোন সহায়তা পাননি বলে জানা গেছে।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসক চট্টলার কণ্ঠকে জানান,  কক্সবাজার জেলায় ১০ হাজার ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে ৮ হাজার আংশিক ও ২ হাজার সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়েছে। শুধু সেন্টমার্টিনেই ১ হাজার ২০০ ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। উপড়ে গেছে বহু গাছপালা। একইভাবে কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের রোহিঙ্গাক্যাম্পে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রায় ৩ হাজার ঘর। তবে হতাহত হননি কেউ।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক বিভীষণ কান্তি দাশ জানান, ঘূর্ণিঝড়ের মহাবিপদ সংকেত কেটে যাওয়ায় আশ্রয়কেন্দ্র থেকে বাড়ি ফিরে গেছেন দুর্গত এলাকার মানুষ। ঘূর্ণিঝড়ে যেসব বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তাদের সরকারিভাবে সহায়তা করা হবে।
কক্সবাজার শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মিজানুর রহমান জানান, ঘূর্ণিঝড় মোখার তান্ডবে রোহিঙ্গাক্যাম্পের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এতে ২৭৮টি শেল্টার, ৩২টি লার্নিং সেন্টার, একটি স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র, ২৯টি মসজিদ/মক্তব ও ১২০টি ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ২ হাজার ৫৪৮টি শেল্টার আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ১ হাজার ৬১১ জন রোহিঙ্গা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ঘূর্ণিঝড় চলাকালীন ৫ হাজার ৩৮৬ জন রোহিঙ্গাকে সরিয়ে নেওয়া হয়।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn

সর্বশেষ খবর

সাম্প্রতিক