দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড নিয়ে দলের সিনিয়র নেতাদের বড় একটি অংশের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। সম্মেলনের পাঁচ মাস পরও কমিটি পূর্ণাঙ্গ না হওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেছেন দলের সিনিয়র নেতা থেকে শুরু করে বিগত কমিটির বড় একটি অংশ। গত বৃহস্পতিবারের বর্ধিত সভায় যাননি দলের গত কমিটির অনেক সিনিয়র নেতা।
ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক স্বাক্ষরিত ৭৫ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদনের জন্য কেন্দ্রে জমা দেয়া হয়েছে। এর পরপরই কমিটিতে কাদের কোন পদে রাখা হয়েছে তা জেলা আওয়ামী লীগের একটি অংশ জেনে যায়। কমিটিতে আগের কমিটির অনেককে মূল্যায়ন না করে নতুন লোকদের গুরুত্বপূর্ণ পদে স্থান দেয়ায় দক্ষিণের চার এমপি কমিটির বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দেন কেন্দ্রে। এছাড়াও আলাদা আলাদা একাধিক নেতাও দলের সাধারণ সম্পাদকের কাছে গিয়ে জমা দেয়া কমিটির বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। এরপর কমিটি আটকে যায়।
বর্তমানে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ছাড়া আর কেউ নেই। দুইজনের এই কমিটির মধ্যে সাধারণ সম্পাদক হজ্বে গেছেন। এখন শুধুমাত্র ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সাংগঠনিক কার্যক্রম চালাচ্ছেন। শুধুমাত্র একজন ভারপ্রাপ্ত সভাপতির বর্ধিত সভা আহ্বান করা এবং প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীসহ সাংগঠনিক কার্যক্রম চালানোর বৈধতা নেই বলে জানিয়েছেন সিনিয়র নেতাদের একাংশ।
এই ব্যাপারে দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের বিদায়ী কমিটির তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আবদুল কাদের সুজন চট্টলার কণ্ঠকে বলেন, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন হয়েছে গত ১২ ডিসেম্বর নগরীর এম এ আজিজ স্টেডিয়ামস্থ জিমনেশিয়ামের সামনের মাঠে। ঐদিন সম্মেলনের প্রথম অধিবেশনের কেন্দ্রীয় নেতারা সভাপতি পদে পুনরায় মোছলেম উদ্দিন আহমদ এমপি (প্রয়াত) এবং সাধারণ সম্পাদক হিসেবে পুনরায় মফিজুর রহমানের নাম ঘোষণা করেন। কিন্তু সম্মেলনের দুই মাসের মধ্যে গত ৫ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে মোছলেম উদ্দিন মৃত্যুবরণ করেন। তার মৃত্যুর পর পটিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ সভাপতি মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরীকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি করা হয়।
তিনি বলেন, আমরা যারা দলের ত্যাগী নেতাকর্মী– সব মেনে নিয়েছি। কিন্তু সম্মেলনের সাড়ে পাঁচ মাস পরও এখনো কমিটি পূর্ণাঙ্গ করতে পারেননি। কেন্দ্রে যে কমিটি জমা দেয়া হয়েছে তা নিয়ে বির্তক সৃষ্টি হয়েছে। কমিটিতে সাতকানিয়া এবং চন্দনাইশ থেকে শিবিরের দুই নেতাকেও রাখা হয়েছে বলে আমরা শুনেছি। জীবনে আওয়ামী লীগ করেনি, যার পরিবারে কেউ আওয়ামী লীগ নেই, তাদেরকে এনে কমিটিতে গুরুত্বপূর্ণ পদে রাখা হয়েছে। আমরা যারা ২৫–৩০ বছর ধরে রাজনীতি করছি এবং যারা ৫০ বছর ধরে আওয়ামী লীগের রাজনীতি করছেন তাদেরকে মূল্যায়ন করা হয়নি। দুইজনের কমিটির মধ্যে এখন দেশে আছেন শুধু ভারপ্রাপ্ত সভাপতি। একজন ভারপ্রাপ্ত সভাপতি তো বর্ধিত সভা ডাকতে পারেন না।
এই ব্যাপারে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী চট্টলার কণ্ঠকে বলেন, আমি তো বর্ধিত সভায় সবাইকে বলেছি। সবাইকে ফোন করেছি। সকল অনুষ্ঠানে দলের সিনিয়র নেতা থেকে শুরু করে আগের কমিটির সবাইকে বলি। বর্ধিত সভা এবং প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানের ব্যাপারেও সবাইকে ফোন করেছি। অনুষ্ঠানের ব্যাপারে সবাইকে উপস্থিত থাকার জন্য আমাদের সংগঠনের গ্রুপে (মোবাইল গ্রুপে) বলেছি। কাউকে বাদ দিইনি। আমাকে প্রধানমন্ত্রী দলের দায়িত্ব দিয়েছেন, সবাইকে নিয়ে কাজ করতে চাই আমি।