দুর্নীতির মামলায় ১৩ বছরের সাজাপ্রাপ্ত বিএনপি নেতা আমানউল্লাহ আমান আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন। এরপর শুনানি শেষে তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এর আগে রোববার (১০ সেপ্টেম্বর) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১ এর বিচারক আবুল কাশেমের আদালতে আত্মসমর্পণ করেন তিনি।
তার আদালতে আসাকে কেন্দ্র করে পুলিশের সঙ্গে বিএনপিপন্থি আইনজীবী ও নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ এরইমধ্যে হয়েছে। বিএনপি নেতাকর্মীরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের দিকে দফায় দফায় ঢিল ছোঁড়ায় লাঠিচার্জ করে পুলিশ।
বিএনপি নেতার আত্মসমর্পণ ঘিরে সকাল থেকে আদালত প্রাঙ্গণে দলটির নেতাকর্মীরা জড়ো হতে থাকেন। পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকেও বাড়ানোর হয় নিরাপত্তা ব্যবস্থাও। এর আগে সকালে আমানের আইনজীবী সৈয়দ নজরুল ইসলাম আত্মসমর্পণের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, তিনি আদালতে আত্মসমর্পণ করবেন; এরপর জামিন চেয়ে আবেদন করা হবে। পাশাপাশি চিকিৎসা ও ডিভিশন চেয়ে আবেদন করা হবে।
এর আগে ৩ সেপ্টেম্বর এ মামলায় আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন আমানের স্ত্রী সাবেরা আমান। জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।
এরপর ৫ সেপ্টেম্বর সুপ্রিম কোর্টের চেম্বার জজ আদালত তার জামিন মঞ্জুর করেন। একই সঙ্গে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ ও নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য আগামীবছর ১৫ জানুয়ারি দিন ধার্য করেছেন আদালত।
এর আগে ৭ আগস্ট বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চে ২৮১ পৃষ্ঠার রায় প্রকাশ করেন। রায়ে বলা হয়, রায়ের অনুলিপি পৌঁছানোর ১৫ দিনের মধ্যে আমান দম্পতিকে বিচারিক (নিম্ন) আদালতে আত্মসমর্পণ করতে হবে।
গত ৩০ মে হাইকোর্টের একই বেঞ্চ দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় আমানের ১৩ বছর ও তার স্ত্রী সাবেরা আমানের ৩ বছরের কারাদণ্ড বহাল রেখে আদেশ দেন। ওইদিন দুদকের অন্য একটি মামলায় বিএনপি নেতা ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুর ৯ বছরের কারাদণ্ড বহাল রাখেন হাইকোর্ট।
সম্পদের তথ্য গোপন ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে আমান দম্পতির বিরুদ্ধে ২০০৭ সালের ৬ মার্চ রাজধানীর কাফরুল থানায় মামলা করে দুদক। ওই বছরের ২১ জুন বিশেষ জজ আদালতের রায়ে আমানকে ১৩ বছর ও সাবেরাকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়। পরে এ দম্পতি রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন। ২০১০ সালের ১৬ আগস্ট হাইকোর্ট আপিল আবেদন মঞ্জুর করে তাদের খালাস দেন। হাইকোর্টের এ রায়ের বিরুদ্ধে দুদক আপিল করলে ২০১৪ সালের ২৬ মে হাইকোর্টের দেয়া রায় বাতিল করে মামলাটির পুনঃশুনানির নির্দেশ দেন আপিল বিভাগ। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১৪ মে পুনঃশুনানি শেষ হয়। পরে গত ৩০ মে হাইকোর্ট এ রায় দেন।