মান্নার চিৎকারেও কারো বিবেক জাগ্রত হয়নি।

সম্পাদকীয়,  চট্রলার কন্ঠ।

কতটুকু ব্যথা পেলে, তোমারও কান্না পাবে… কতটুকু ক্ষতি চাই, তোমাকে জাগাতে হলে?’- সঙ্গীত শিল্পী সায়ানের এ প্রশ্নের উত্তর আজও দিতে পারি নি আমি, আমরা।

যদি এর উত্তর দেওয়ার চেষ্টাটা অন্তত করতাম আমরা, তবে রক্তের হোলি খেলা বন্ধ হতো। মানুষ মানুষই থাকতো; পশুত্ব তাকে গ্রাস করতো না।

গতকাল নগরীর পাহাড়তলী থানাধীন সরাইপাড়া এলাকায়, মাত্র আট হাজার টাকার জন্য দীর্ঘদিনের বন্ধু হোসেন মান্নাকে প্রকাশ্য দিবালোকে খুন করে জসিম উদ্দিন। দুঃখজনক হলেও সত্য আর দশটা ঘটনার মতো খুনের ঘটনাটিও আশপাশের মানুষের মনে এতটুকু রেখাপাত করেনি। হোসেন মান্নার চিৎকারে কারও দৃষ্টি ফেরেনি, বিবেকের দরোজাও তাই খুলেনি। যে যার কাজে ব্যস্ত ছিলেন, পান দোকান থেকে কেউ সিগারেট কিনে দিয়েছেন সুখটান, কেউ পকেট থেকে মোবাইল ফোনটি বের করে ভিডিও করতে ব্যস্ত হয়ে পড়লেন। একটা ভ্যানগাড়ির ফাঁক দিয়ে কয়েকজন ভিড় করে যেন উপভোগ করছিলেন খুনের দৃশ্যটি। আরেকজনতো মাত্র দুই ফুট দূরে দাঁড়িয়েই দেখছিলেন যেন ছুরিটা সঠিক জায়গায় বিঁধলো কিনা! এমন নির্মম নৃশংস দৃশ্য উপভোগের লোকের অভাব ছিল না ঘটনাস্থলের আশেপাশে; শুধু নিহত ব্যক্তিটিকে রক্ষা করার মতো ‘মানুষ’ ছিলেন না একজনও!

দিনে দিনে অমানুষ আর না–মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। ত্রিশ লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত দেশটিতে আজ ‘মানুষে’র বড়ো অভাব। ‘মানুষ নামের অমানুষে’ ভরে আছে চারপাশটা। প্রতিটি ছোট বড় অপরাধ আমাদের সামনে প্রতিনিয়ত ঘটে আসছে। আমরা দেখেও না দেখার ভান করে চলে যাচ্ছি। ভাবি, প্রশাসন তো আছেই। নিজেকেও যেন এদেরই দলে দেখতে পাই।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn

সর্বশেষ খবর

সাম্প্রতিক