আট মাস পর যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে নগরের মুরাদপুর মোড়ে চশমা খালের উপর নির্মিত কালভার্টটি। গতকাল শনিবার বিকালে সিডিএ চেয়ারম্যান এম জহিরুল আলম দোভাষ কালভার্টটি উদ্বোধন করেন। এরপর যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়।
এর আগে জলাবদ্ধতা নিরসনে চলমান মেগা প্রকল্পের আওতায় মুরাদপুর মোড়ে পুরনো বক্স কালভার্ট ভেঙে নতুন করে নির্মাণকাজ শুরু হয় গত ১৭ জানুয়ারি। ওইদিন থেকে সাময়িক বন্ধ রাখা হয় মুরাদপুর–অক্সিজেন সড়কে যান চলাচল। গতকাল উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জহিরুল আলম দোভাষ বলেন, চট্টগ্রাম থেকে যেন জলাবদ্ধতা দূর হয় সেজন্য প্রধানমন্ত্রী উদ্যোগ নেন এবং সেটা সিডিএর মাধ্যমে নেন। জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি দিতে প্রধানমন্ত্রী প্রকল্প দিয়েছেন সিডিএকে। বাংলাদশে সেনাবাহিনীর মাধ্যমে কাজটা করাচ্ছেন। শহরের পানি নিষ্কাশনে যে ড্রেন আছে তার পাঁচ ভাগের এক ভাগ এ প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত। শহরে খালসহ ১ হাজার ৬৮০ কিলোমিটার ড্রেন আছে। সিডিএ ৩১৪ কিলোমিটারে কাজ করছে। আমাদের অংশটা শেষ হলে মানুষের কষ্ট অনেক কমে আসবে। জলাবদ্ধতা থেকে রেহাই পাবেন। এখানে পানি উন্নয়ন বোর্ড, সিটি কর্পোরেশনও কাজ করছে। সবগুলোর কাজ শেষ হলে চট্টগ্রামবাসী জলাবদ্ধতা থেকে সম্পূর্ণ মুক্তি পাবেন।
তিনি বলেন, এ এলাকায় যারা বসবাস করেন তাদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি। তারা অনেকদিন কষ্ট সহ্য করেছেন। এখানে রাস্তা বন্ধ ছিল। ওয়াসার পাইপ ছিল। ওয়াসার কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত রাস্তার কাজ শেষ করতে পারিনি। তিনি বলেন, কাল (আজ) থেকে পবিত্র রবিউল আওয়াল মাস শুরু হবে। ১২ রবিউল আওয়াল যে জুলুস হয় তা এ রাস্তা দিয়ে যায়। আজ আমরা উদ্বোধন করে দিলাম, যাতে সুন্দরভাবে মিলাদুন্নবীর জুলুসটা যেতে পারে।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা সেনাবাহিনীর প্রকল্প পরিচালক লে. কর্নেল শাহ আলী। উপস্থিত ছিলেন সেনাবাহিনীর ৩৪ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশনের ভারপ্রাপ্ত কমান্ডার কর্নেল আজিজুর রউফ, সিডিএর বোর্ড সদস্য জসিম উদ্দিন শাহ, প্রকৌশলী মো. মুনির উদ্দিন আহমদ, মো. ফারুক, অ্যাডভোকেট জিনাত সোহানা, প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস্ ও সিডিএর প্রকল্প পরিচালক আহমদ মঈনুদ্দিন।
সংশ্লিষ্টরা জানান, কালভার্টটি নির্মাণে খরচ হয়েছে সাড়ে ৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৩ কোটি টাকা মূল ব্রিজ নির্মাণ এবং বাকি দেড় কোটি টাকা খরচ পাইপলাইন সরাতে। কালভার্টটির দৈর্ঘ্য ২১ মিটার এবং প্রস্থ ১০ মিটার। পথচারী চলাচলে কয়েকদিনের মধ্যে কালভার্টটিতে ফুটপাত করে দেওয়া হবে।
জানা গেছে, মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে নতুন কালভার্টটির নির্মাণকাজ শেষ হয়। এর আরো এক মাস পর ২৫ জুন কালভার্টটির আংশিক খুলে দেওয়া হয় যান চলাচলের জন্য। ঈদুল আজহার পর সেটা আবার বন্ধ করে দেওয়া হয়। এরপর ৮ সেপ্টেম্বর খুলে দেওয়া হয়, যা বুধবার বন্ধ করে দেওয়া হয়। সর্বশেষ গতকাল আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হলো।
উত্তর চট্টগ্রামের হাটহাজারী, রাউজান, রাঙ্গুনিয়া, ফটিকছড়ি ছাড়াও রাঙামাটি এবং খাগড়াছড়ির যানবাহনগুলো মুরাদপুর–অঙিজেন সড়ক হয়ে চলাচল করে। এই অংশটি শহরের কয়েকটি ওয়ার্ডের লোকজনের চলাচলের অন্যতম প্রধান সড়ক। ফলে মুরাদপুর মোড়ে দীর্ঘ ৮ মাস যান চলাচল বন্ধ রাখায় প্রতিদিন কয়েক লক্ষ লোককে দুর্ভোগ পোহাতে হয়। গতকাল সে দুর্ভোগের অবসান হলো।