চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্তির বারো দিনের মাথায় আবারো সংঘর্ষে জড়িয়েছে ছাত্রলীগের দুইটি উপগ্রুপ। সংঘর্ষে জড়ানো পক্ষ দুটি হলো সোহরাওয়ার্দী হলে অবস্থানরত বিজয় ও শাহজালাল হলে অবস্থানরত সিক্সটি নাইন। এ ঘটনায় দুই গ্রুপের অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। গতকাল শুক্রবার দুপুরে একটি খাবারের দোকানে কথা–কাটাকাটির জেরে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, খাবারের দোকানে ডালের বাটি নিয়ে বিজয় গ্রুপের অনুসারী মাহির চৌধুরীর সাথে কথা–কাটাকাটি হয় সিক্সটি নাইন গ্রুপের অনুসারী আজমিরের। এক পর্যায়ে তা হাতাহাতিতে রূপ নেয়। এ ঘটনার পর পরেই দুই গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে বিকেল তিনটার দিকে তা সংঘর্ষে রূপ নেয়। সংঘর্ষ চলাকালে উভয় পক্ষের নেতাকর্মীদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও ইট পাটকেল নিক্ষেপ চলতে থাকে। উভয় পক্ষের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ চলাকালে দেশীয় অস্ত্রের মহড়া দিতে দেখা যায়। এসময় রণক্ষেত্রে পরিণত হয় ক্যাম্পাসের সোহরাওয়ার্দী–আমানত হল সড়ক। পরবর্তীতে বিকেল চারটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি ও পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে উভয়পক্ষকে শান্ত করে নিজ নিজ হলে পাঠিয়ে দেন। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী চলা এ সংঘর্ষে দুই পক্ষের ২০ জন আহত হয়েছেন বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টার সূত্রে জানা গেছে।
জানতে চাইলে সিক্সটি নাইন গ্রুপের নেতা শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সহ–সভাপতি সাইদুল ইসলাম বলেন, খাবারের দোকানে ওরা (বিজয়ের নেতাকর্মীরা) আমাদের এক ছেলের উপর পূর্ব ঘটনার জের ধরে ইচ্ছেকৃতভাবে ঝামেলায় জড়িয়েছে। এর পর তাদের ছেলেরা সোহরাওয়ার্দী হল থেকে বের হয়ে শাহজালাল হলে হামলা চালাতে আসে। যার ফলে আমাদের ছেলেরাও হল থেকে বের হলে সংঘর্ষ শুরু হয়। অপরদিকে বিজয় গ্রুপের নেতা শাখাওয়াত হোসেন বলেন, খাবারের দোকানে ঝামেলা হওয়ার পর আমি আমার কর্মীদের হলে ঢুকিয়ে দিয়ে সিনিয়রদের সাথে কথা বলে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করতেছিলাম। এমন সময় তারা (সিক্সটি নাইনের অনুসারীরা) শাহজালাল হল থেকে বের হয়ে আমাদের হলে অতর্কিত হামলা চালায়। আমাদের ছেলেরা তাদেরকে প্রতিহত করে।
সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. নূরুল আজিম সিকদার চট্রলার কণ্ঠকে বলেন, হোটেলে খাবার খেতে গিয়ে সোহরাওয়ার্দী হল ও শাহজালাল হলের ছেলেদের মধ্যে ঝামেলা হয়েছিল। খবর পেয়েই আমরা পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে তাদের শান্ত করতে সক্ষম হই। ক্যাম্পাসের পরিস্থিতি এখন শান্ত আছে। এর আগে গত ২১ সেপ্টেম্বর থেকে ২৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত টানা চারদিন শাখা ছাত্রলীগের ৩ গ্রুপের মধ্যে থেমে থেমে সংঘর্ষ চলে। এ ঘটনায় ২৪ সেপ্টেম্বর শাখা ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ।