ইমরান নাজির।চট্রলার কন্ঠ।
চট্টগ্রাম ওয়াসার কর্ণফুলী পানি সরবরাহ প্রকল্পের অধীনে ‘শেখ হাসিনা পানি শোধনাগার দ্বিতীয় প্রকল্পের’ সাথে মোট ৮শ’ কিলোমিটার পাইপ লাইন (ট্রান্সমিশন এবং ডিস্ট্রিবিউশন লাইন) বসানো হয়েছে নগরীতে। নগরীর প্রায় এলাকায় পুরনো পাইপ তুলে নতুন পাইপ বসানো হয়েছে এই প্রকল্পের মাধ্যমে। ২০২২ সালে এই প্রকল্প শেষ হয়েছে। কিন্তু নগরীর আরো বেশ কিছু এলাকায় এখনো পুরনো পাইপ রয়ে গেছে। পুরনো পাইপ লাইনের কারণে নগরীর অনেক এলাকায় ঠিক মতো পানি পৌঁছে না। পুরনো পাইপ লাইনে ভালোভাবে পানির প্রেসার দেয়া যায় না। অনেক এলাকায় পাইপ ফেটে পানি বাইরে পড়ে প্রতিনিয়ত নষ্ট হচ্ছে। নগরীর এসব এলাকায় নির্বিঘ্নে পানি পৌঁছানোর লক্ষ্যে চট্টগ্রাম ওয়াসা বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে নগরীতে আরো ৩শ’ কিলোমিটার পাইপ লাইন বসানোর উদ্যোগ নিয়েছে। চট্টগ্রাম ওয়াসার এখন দৈনিক পানি উৎপাদন ক্ষমতা ৫০ কোটি লিটার। নগরবাসীর চাহিদাও ৫০ কোটি লিটার। উৎপাদন এবং চাহিদা সমান সমান হলেও পুরনো পাইপ লাইনের কারণে অনেক এলাকার বাসিন্দা ওয়াসার পানির সুফল পাচ্ছেন না। এই সমস্যা দূর করতে নগরীতে নতুন ভাবে আরো ৩শ’ কিলোমিটার পাইপ লাইন বসানো হবে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম ওয়াসার তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. আরিফুল ইসলাম। চট্টগ্রাম ওয়াসা সূত্রে জানা যায়, নতুন এই প্রকল্পের আওতায় নগরীর সর্ব দক্ষিণে সাগর তীরবর্তী উত্তর ও দক্ষিণ পতেঙ্গাসহ পুরো নগরী নতুন পাইপ লাইনের আওতায় চলে আসবে। তখন পানি সরবরাহ আর বাধাগ্রস্ত হবে না। এই ব্যাপারে চট্টগ্রাম ওয়াসার তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. আরিফুল ইসলাম বলেন, শেখ হাসিনা পানি শোধনাগার দ্বিতীয় প্রকল্পের সাথে মোট ৮০০ কিলোমিটার পাইপ লাইন (রাঙ্গুনিয়া থেকে নগরী পর্যন্ত প্রায় ১শ’ কিলোমিটার ট্রান্সমিশন লাইন এবং নগরীতে ৭শ’ কিলোমিটারের মতো ডিস্ট্রিবিউশন লাইন) বসানো হয়েছিল নগরীতে।
জাপানের জাইকা, বাংলাদেশ সরকার ও চট্টগ্রাম ওয়াসার যৌথ অর্থায়নে এই প্রকল্পে মোট ব্যয় হয়েছিল ৪ হাজার ৪৯১ কোটি ১৫ লাখ টাকা। এর মধ্যে জাইকা ৩ হাজার ৬২৩ কোটি ২৮ লাখ টাকা, বাংলাদেশ সরকার ৮৪৪ কোটি ৮০ লাখ টাকা এবং চট্টগ্রাম ওয়াসা ২৩ কোটি ৭ লাখ টাকা অর্থায়ন করে। এর আগে জাইকার অর্থায়নে শেখ হাসিনা পানি শোধনাগার প্রকল্প ইউনিট–১ বাস্তবায়িত হয়েছিল।
এই প্রকল্পেও ৪ হাজার কোটি টাকার মতো ব্যয় হয়েছিল। এই দুটি প্রকল্প থেকে প্রতিদিন ২৮ কোটি লিটার পানি উৎপাদিত হচ্ছে। নগরবাসী এখন এই দুটি প্রকল্পে পানি পাচ্ছেন প্রতিদিন। এই বৃহৎ দুটি প্রকল্প মাননীয় প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করেছেন। এদিকে মদুনাঘাট শেখ রাসেল পানি সরবরাহ প্রকল্প থেকে দৈনিক ৯ কোটি লিটার পানি সরবরাহ করা হচ্ছে। সব মিলে চট্টগ্রাম ওয়াসার এখন দৈনিক উৎপাদন ক্ষমতা ৫০ কোটি লিটার। কিন্তু পুরনো পাইপ লাইনের কারণে নগরীর অনেক এলাকায় পানি সরবরাহ কিছুটা বিঘ্ন হচ্ছে। তাই বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে নগরীতে আরো ৩শ কিলোমিটার পাইপ লাইন বাসানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। প্রকল্পের আমরা ডিপিপি তৈরি করেছি। এই মাসে আমরা প্রকল্পটি মন্ত্রণালয়ে পাঠাবো। প্রকল্পে বিশ্বব্যাংক ৩ হাজার কোটি টাকা অর্থায়ন করবে। এই প্রকল্পের অধীনে নগরীতে ৩শ’ কিলোমিটার পাইপ লাইন বসানোর কাজ শেষ হলে পুরো নগরীর আনাচে কানাচে কোথাও আর পুরনো পাইপ লাইন থাকবে না। তখন নগরীর সর্বত্র সমান ভাবে পানি পাবে।
প্রকৌশলী মো. আরিফুল ইসলাম আরও বলেন, যেহেতু জাইকার অর্থায়নে শেখ হাসিনা পানি শোধনাগার প্রকল্প ইউনিট–১ হাসিনা পানি শোধনাগার প্রকল্প ইউনিট–২ এই দুটি বৃহৎ প্রকল্প হয়েছে–তারা চাচ্ছে প্রকল্প দুটি আনুষ্ঠানিক ভাবে চট্টগ্রাম ওয়াসাকে হস্তান্তর করতে। আগামী ১৪ অক্টোবর রেডিসনে ‘শেখ হাসিনা পানি শোধনাগার প্রকল্প –১’ ও ‘শেখ হাসিনা পানি শোধনাগার ইউনিট–২’ প্রকল্পের হস্তান্তর অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে জাইকা