চাঁদগাঁও থানার ওসিসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা রেকর্ডের নির্দেশ

ওয়াসিম জাফর

পুলিশি হেফাজতে দুদকের সাবেক উপ–পরিচালক সৈয়দ মোহাম্মদ শহীদুল্লাহর মৃত্যুর ঘটনায় চান্দগাঁও থানার ওসি, একজন পরিদর্শক, দুজন এএসআইসহ নয়জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। গতকাল চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ জেবুন্নেছার আদালতে নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু নিবারণ আইনে মামলাটি করেন সৈয়দ মোহাম্মদ শহীদুল্লাহর স্ত্রী ফৌজিয়া আনোয়ার।

আসামিরা হলেন, চান্দগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খাইরুল ইসলাম, পরিদর্শক (তদন্ত) মবিনুল হক, সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মো. ইউসুফ ও সোহেল রানা এবং প্রতিপক্ষ হিসেবে পরিচিত এস এম আসাদুজ্জামান, জসিম উদ্দিন, মো. লিটন, রনি আক্তার তানিয়া ও কলি আক্তার। বাদীর আইনজীবী রেজাউল করিম চৌধুরী চট্রলার কণ্ঠকে  বলেন, আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে চান্দগাঁও থানাকে রেকর্ড করতে নির্দেশ দেন এবং পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) মামলাটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেন।

বিডিনিউজ জানায়, মামলায় অভিযোগ করা হয়, এস এম আসাদুজ্জামান, জসীম উদ্দিন, মো. লিটন ষড়যন্ত্র করে শহীদুল্লাহর জায়গা দখলের জন্য মিথ্যা মামলাটি করিয়েছেন। আর সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. হারুনর রশিদ নিয়ম বর্হিভুতভাবে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করিয়ে ‘অস্বাভাবিক দ্রুততার’ সঙ্গে গ্রেপ্তার করে নাজেহাল ও শারীরিক এবং মানসিক নির্যাতন করায় ভিকটিমের মৃত্যু হয়েছে। ঘটনার দিন দুই এএসআই ইউসুফ ও সোহেল রানা দুদক কর্মকর্তা শহীদুল্লাহকে গ্রেপ্তার করতে গেলে তিনি নিজের পরিচয় দিয়ে পরদিন আদালতে হাজির হওয়ার কথা জানান। কিন্তু তারা কোনো কথা না শুনে এবং ওষুধ সেবন করতে না দিয়ে জোর করে টানাহেঁচড়া করে শহীদুল্লাহকে থানায় নিয়ে যান। মামলায় আরও অভিযোগ করা হয়, দুই এএসআই এবং পরিদর্শক তদন্ত শহীদুল্লাহকে থানায় ওসির কক্ষে নিয়ে নানাভাবে হেনস্থা করে। ঘটনার সময় ওসি নিজেকে আড়াল করে রেখেছিলেন উল্লেখ করে আরও অভিযোগ করা হয়, শহীদুল্লাহ থানায় অসুস্থ হয়ে পড়লে থানায় যাওয়া আত্মীয়–স্বজনদের কাছে দিয়ে দেয়। তখন স্বজনরা তাকে বেসরকারি পার্ক ভিউ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। শহীদুল্লাহকে নেয়ার সময় কোনো পুলিশ সদস্য তাদের সাথে হাসপাতালে যাননি বলেও অভিযোগ করা হয় মামলার আবেদনে।

গত ৩ অক্টোবর রাতে নগরীর এক কিলোমিটার এলাকায় বাসার কাছে রাস্তা থেকে একটি সিআর মামলায় দুদকের সাবেক উপ–পরিচালক সৈয়দ মো. শহীদুল্লাহকে গ্রেপ্তার করে চান্দগাঁও থানা পুলিশ। পরে থানায় অসুস্থ হয়ে মারা যান তিনি। রনি আক্তার তানিয়া নামে এক নারীর করা মামলায় গ্রেপ্তার করা হয় শহীদুল্লাহকে। ওই নারী নিজেকে ‘শহীদুল্লাহর বাসার গৃহকর্মী’ দাবি করেন। বেতনের ‘বকেয়া টাকা আনতে বাসায় যাওয়ায়’ গত ২৩ অগাস্ট রাতে তাকে শহীদুল্লাহ ও তাদের আত্মীয় কায়সার আনোয়ার ‘মারধর করেছিলেন’ বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়।

শহীদুল্লাহর বিরুদ্ধে করা মামলা প্রত্যাহারের আবেদন : এদিকে দুদক কর্মকর্তা শহীদুল্লাহর বিরুদ্ধে করা সিআর মামলাটি (মারধরের অভিযোগ) প্রত্যাহার চেয়ে আদালতে আবেদন করেছেন বাদী রনি আক্তার তানিয়া। গতকাল চট্টগ্রামের মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কাজী শরীফুল ইসলামের আদালতে আবেদনটি করা হয়। আদালতের বেঞ্চ সহকারী ওসমান গণি এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, এ বিষয়ে আগামী ৩০ অক্টোবর শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn

সর্বশেষ খবর

সাম্প্রতিক