ওয়াসিম জাফর
ভর্তি বাণিজ্য এবং কোচিং বাণিজ্য বন্ধ করতেই লটারিতে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে বলে মন্তব্য করে শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেছেন, এত ছোট বাচ্চাদের মেধা যাচাইয়ের কিছু নেই। সব স্কুলকেই সব শিক্ষার্থী নিতে হবে। ভর্তির নয়া নীতিমালা এবং শিক্ষার্থী ভর্তির আবেদন ও লটারিতে শিক্ষার্থী ভর্তি প্রসঙ্গে দৈনিক আজাদীর সঙ্গে আলাপকালে তিনি উপরোক্ত মন্তব্য করেন।
শিক্ষা উপমন্ত্রী বলেন, পৃথিবীর কোথাও ১০, ১১ বা ১৫ বছরের বাচ্চাদের মেধা যাচাইয়ে কোনো পরীক্ষা নেয়া হয় না। একটি স্কুল এত ছোট বাচ্চার মেধা যাচাই করে কিভাবে! ওখানে তো এক্সট্রা অর্ডিনারি মেধাবী ছাড়া সবাই নরম্যাল। যদি মেধা যাছাই করে ভর্তি করাতে হয় তাহলে স্কুলের কাজ কি? যদি শুধু ভালোটা নিয়েই তারা থাকতে চায়, তাহলে তারা আর শিখালো কি? তাদের দায়িত্ব কি?
নওফেল বলেন, সকল শিক্ষার্থী যেন সকল স্কুলে এবং সকল শিক্ষার্থী যেন তার নিকটবর্তী স্কুলে ভর্তি হতে পারে, সকল স্কুলে যেন সকল শিক্ষার্থীর এক্সেস থাকে সেটাই আমাদের চাওয়া। আর এই লক্ষ্যে নতুন নীতিমালা করা হয়েছে। লটারির মাধ্যমে ভর্তির নিয়ম অব্যাহত রাখা হয়েছে।
শিক্ষার্থীর ক্যাচমেন্ট এরিয়া থাকতে হবে বলে উল্লেখ করে ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, কেউ আগ্রাবাদে থাকে, অথচ পড়তে আসতে হচ্ছে বাওয়া স্কুল বা নাসিরাবাদে। এটা যেন না হয়। যে শিক্ষার্থী যে এলাকায় থাকে সে যেন ওই এলাকার স্কুলে ভর্তির সুযোগ পায় সেদিকে আমাদের সজাগ থাকতে হবে। প্রসঙ্গক্রমে তিনি বলেন, শিক্ষার্থীর ক্যাচমেন্ট এরিয়া নিশ্চিত করা গেলে তা শুধু লেখাপড়াতেই নয়, নগরীর ট্রাফিক ব্যবস্থাপনাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রেই ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। স্কুলে আসতে যেতেই যদি দীর্ঘ সময় ব্যয় হয়ে যায় তাহলে শিক্ষার্থী শিখবে কবে? কখন লেখাপড়া করবে? আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে শিক্ষার্থী যাতে তার পাশের স্কুলেই পড়তে পারে।
নয়া নীতিমালার টার্গেট হচ্ছে স্কুলের দায়িত্ব হচ্ছে শিক্ষার্থীদের গড়ে তোলা। তথাকথিত মেধাবী তকমা দিয়ে শিক্ষার্থী ভর্তির আড়ালে যে ভর্তি বাণিজ্য এবং কোচিং বাণিজ্য চলতো তা চিরতরে বন্ধ করে দিতেই বর্তমান সরকার নয়া নীতিমালা প্রণয়ন এবং বাস্তবায়ন করছে।
চট্টগ্রামের সরকারি–বেসরকারি বিদ্যালয়গুলোতে নীতিমালা অনুযায়ীই শিক্ষার্থী ভর্তি হবে বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, কোন কোন স্কুলে প্রেশারেও ছাত্রছাত্রী ভর্তি করা হয়। ওইদিন বাওয়া স্কুলে দেখলাম এক শাখায় ৭০ জনকে পাঠদান করাচ্ছে। কেউ কেউ আলাদা সেকশন আছে বলেও বাড়তি শিক্ষার্থী ভর্তি করায় বলে শিক্ষা উপমন্ত্রী মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, এগুলো বন্ধ করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।