পুলিশ সাহায্য না করলে আওয়ামী লীগের টিকে থাকা কঠিন হতোঃ ভূমিমন্ত্রী

 

পুলিশের অনুষ্ঠানে গিয়ে ‘সবসময় লুকিয়ে এবং পরোক্ষভাবে আওয়ামী লীগকে সহযোগিতা’ করার জন্য পুলিশ প্রশাসনের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন ভূমি মন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ।

তিনি বলেন, ‘ক্ষমতায় যে-ই থাকুক না কেন, সে বিএনপি হোক বা জাতীয় পার্টি হোক, পুলিশ প্রশাসনের সাথে আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দের সবসময় আন্ডারস্ট্যান্ডিং ছিল। সবসময়ে লুকিয়ে এবং পরোক্ষভাবে সহযোগিতা করতে দেখেছি।’শনিবার (২০ আগষ্ট) চট্টগ্রাম নগরীর দামপাড়া পুলিশ লাইনে চট্টগ্রাম নগর পুলিশ (সিএমপি) আয়োজিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭তম শাহাদাত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে ভূমি মন্ত্রী বলেন, ‘পুলিশ যদি আওয়ামী লীগের প্রতি কঠিন, এগ্রেসিভ ও চরম আকার ধারণ করত, আওয়ামী লীগের টিকে থাকা কঠিন হতো।’

তিনি বলেন, ‘হয়তো টিকে থাকত, কিন্তু আরও বেশি কঠিন হতো।’

ভূমি মন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ বলেন, ‘দীর্ঘ ২১ বছর সংগ্রামের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেছে। দুঃসময়ে পুলিশ প্রমাণ করেছে আওয়ামী লীগের প্রতি তাদের সবসময় দুর্বলতা ছিল। পুলিশকে সাধারণত যেই সরকার থাকে তার নির্দেশনামতো কর্মকাণ্ড চালিয়ে যেতে হয়। সেটা করেছেন, কিন্তু বরাবরই আমি দেখেছি আওয়ামী লীগের প্রতি পুলিশের দুর্বলতা।’

তিনি বলেন, ‘ক্ষমতায় যে-ই থাকুক না কেন, সে বিএনপি হোক বা জাতীয় পার্টি হোক, পুলিশ প্রশাসনের সাথে আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দের সবসময় আন্ডারস্ট্যান্ডিং ছিল। সবসময়ে লুকিয়ে এবং পরোক্ষভাবে সহযোগিতা করতে দেখেছি।’

মন্ত্রী বলেন, ‘দুঃসময়ে আপনারা প্রমাণ করেছেন। অনেক পুলিশ অফিসার হয়তো ছিলেন, অনেকে অবসরে গেছেন ওই আমলে, উপর থেকে নিচে। কিন্তু আমরা সবসময় খেয়াল করেছি আওয়ামী লীগের প্রতি পুলিশের একটি দুর্বলতা সবসময় ছিল। পুলিশ আমাদের অনেকভাবে সহায়তা করেছি।’

অতীতের স্মৃতিচারণ করে সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ‘৭৫ এর পরে চট্টগ্রামের অনেক গুরুত্বপুর্ণ সভা অনুষ্ঠিত হতো আমাদের বাড়িতে। ঢাকা থেকে বড় বড় নেতাকর্মীরা সেসময় আমার বাবার (আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবু) সঙ্গে আলোচনা করতে আসতেন। আমরা ছিলাম মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি। আমার বাবাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল, কোতোয়ালী থানায় রাখা হয়েছিল। পুলিশ প্রশাসন যদি কঠিন হতো কিংবা আরও এগ্রেসিভ হতো, আওয়ামী লীগের প্রতি চরমভাবে আঘাত হানতো, তাহলে আওয়ামী লীগের টিকে থাকা কঠিন হয়ে যেত। হয়তো টিকে থাকতাম আমরা, কিন্তু অনেক কষ্ট হতো।’

তিনি আরও বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী অকৃতজ্ঞ নন। প্রধানমন্ত্রী ক্ষমতায় আসার পর তার কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে পুলিশের প্রতি কৃতজ্ঞতা দেখিয়েছেন।’

মন্ত্রী বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মধ্যে পুলিশ সবচেয়ে বঞ্চিত। বিগত কোনো সরকার তাদেরকে সঠিকভাবে মূল্যায়ন করেনি। তাদের পরিবারকে দেখাশোনা, তাদের চাহিদা, তাদের বেতন কাঠামো এবং সুযোগ-সুবিধা কোনোটিই দেওয়া হয়নি।’

ভূমি মন্ত্রী বলেন, ‘এই সরকার ক্ষমতায় আসার পর পুলিশ বাহিনীকে যে লেভেলে নিয়ে গেছে, তাতে আপনাদের আর পেছনে ফিরে তাকাতে হবে না। এমনকি আপনাদের পুলিশের আইজি মহোদয়কে থ্রি স্টার পদমর্যাদার র‌্যাঙ্ক দিয়েছেন। এই সরকার আপনাদের দেখাশোনা করা ছাড়াও পুলিশকে এমনকি ব্যাংকও দিয়েছে। আমি মনে করি বিগত যতগুলো সরকার ছিল, তার মধ্যে আমাদের সরকার সবচেয়ে বেশি পুলিশ বাহিনীকে সহায়তা করেছে।’

মন্ত্রী আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন অন্য উচ্চতায় চলে আসছে। বাংলাদেশের সুখ, বাংলাদেশের অবস্থান স্বাধীনতাবিরোধী চক্র কখনও মেনে নেয়নি। এখনো মেনে নেবে না। কী কী বলবে আমাদের দেখার দরকার নেই। জাতি দেখেছে তারা কিভাবে দেশ পরিচালনা করেছে। তারা ব্যর্থ।’

চট্টগ্রাম নগর পুলিশের কমিশনার কৃষ্ণপদ রায়ের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীন আখতার, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ চট্টগ্রাম মহানগর ইউনিটের কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মোজাফফর আহমদ, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ চট্টগ্রাম জেলা ইউনিটের ভারপ্রাপ্ত কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা একেএম সরওয়ার কামাল, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (প্রশাসন ও অর্থ) এমএ মাসুদ, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম এন্ড অপারেশন) আ স ম মাহতাব উদ্দিনসহ পুলিশের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দসহ চট্টগ্রাম নগর পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ।ভার প্রধান অতিথি জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আবৃত্তি, রচনা লিখা, চিত্রাঙ্কন ও কুইজ প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার তুলে দেন।

 

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn

সর্বশেষ খবর

সাম্প্রতিক