ইমরান নাজির
এবছরও চট্টগ্রামের বিজয় দিবসের শ্রদ্ধা নিবেদন মিউনিসিপ্যাল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠানের ঘোষণা দিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. রেজাউল করিম চৌধুরী। নির্মাণাধীন শহীদ মিনার দৃশ্যমান না হওয়া এবং সিড়ি সঙ্কীর্ণ ও বয়োবৃদ্ধদের উপযোগী না হওয়ার কারণে নবনির্মিত শহীদ মিনারে বিজয় দিবস পালন করা হবে না।
আজ শনিবার (২ ডিসেম্বর) সকালে চট্টগ্রাম মুসলিম ইন্সটিটিউট সাংস্কৃতিক কমপ্লেক্সে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় চসিক মেয়র রেজাউল করিম এ ঘোষণা দেন।
এসময় মেয়র বলেন, এ বিষয়টি কীভাবে সমাধান করা যায় তা বুঝার জন্য সংশ্লিষ্টদের নিয়ে আমরা একটি কমিটি করে নির্মাণাধীন শহীদ মিনারের স্থপতিদের পাশাপাশি চট্টগ্রামের অভিজ্ঞ অন্য স্থপাতিদের মতামত নিয়ে কীভাবে শহীদ মিনারকে দৃশ্যমান ও জনবান্ধব করা যায় তা নিয়ে কাজ করব আমরা। আজকের সভায় উপস্থিত সবার মতামতের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত হল এইবারের বিজয় দিবসে এই নির্মাণাধীন শহীদ মিনারে আমরা শ্রদ্ধা নিবেদন করবনা। গতবারের মতো এবারও মিউনিসিপ্যাল স্কুল প্রাঙ্গণে ১৬ ডিসেম্বর আমরা শ্রদ্ধা নিবেদন করব।’
এদিন চসিক মেয়রের আহবানে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় বীর মুক্তিযোদ্ধা, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিবর্গ, সাংবাদিকবৃন্দ ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার প্রতিনিধিবৃন্দ শহীদ মিনার ও বিজয় দিবস উদযাপন বিষয়ে তাদের মন্তব্য তুলে ধরেন।
সভায় একুশে পদকপ্রাপ্ত শিক্ষাবিদ ড. অনুপম সেনগুপ্ত, মুক্তিযুদ্ধ গবেষক ডা. মাহফুজুর রহমান, একুশে পদকপ্রাপ্ত কবি ও সাংবাদিক আবুল মোমেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা ফাহিমউদ্দিন আহমেদ, মোহাম্মদ হারিছ ও কাজী আবু তৈয়ব, ১৪ দলীয় জোট নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা ইন্দুনন্দন দত্ত, একুশে পদকপ্রাপ্ত নাট্যজন আহমেদ ইকবাল হায়দার, সাংস্কৃতিক সংগঠক দেওয়ান মাকসুদ আহমেদ, কুতুবউদ্দিন চৌধুরী, মহিউদ্দিন শাহ আলম নিপু, সাংবাদিক ওমর কায়সার ও কামরুল হাসান বাদল, উদীচী চট্টগ্রাম জেলা সংসদের সভাপতি ডা. চন্দন দাশ ও সাধারণ সম্পাদক শীলা দাশগুপ্তা, নাট্য সংগঠক শেখ শওকত ইকবাল, দীপক চৌধুরী, শাহীন আহমেদ, সুচরিত দাশ খোকন ও অলোক মাহমুদ, সিপিবি চট্টগ্রাম জেলার সহ সাধারণ সম্পাদক নুরুচ্ছাফা ভূঁইয়া, নগর যুবলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ফরিদ মাহমুদ, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা এম আর আজিম, কাউন্সিলর জহরলাল হাজারী ও আতাউল্লা চৌধুরী, ন্যাপ নেতা মিটুল দাশগুপ্ত, সাবেক কাউন্সিলর জাভেদ নজরুল, নৃত্যশিল্পী প্রমা অবন্তী ও অনন্য বড়ুয়া, প্রমা আবৃত্তি সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ পাল, উদীচীর সহ-সভাপতি সুনীল ধর, সঙ্গীতশিল্পী শিলা দাশ, দীপেন চৌধুরী, নৃত্যশিল্পী শারমিন হোসেন, আবৃত্তিশিল্পী মিলি চৌধুরী, সৃজনশীল প্রকাশক সাধারণ সম্পাদক আলী প্রয়াস, প্রকল্প পরিচালক লুতফুর রহমান খান, বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলার পরিচালক সুশান আনোয়ার চৌধুরী, বঙ্গবন্ধু আবৃত্তি পরিষদের সভাপতি অঞ্চল চৌধুরী, ছড়াকার সংসদের সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম মোদাচ্ছের আলী, বিজয় ‘৭১ সভাপতি মো. জসীম উদ্দিন চৌধুরী, নাট্যকর্মী মো. আলী টিটু, জানে আলম, সঙ্গীত ভবন সম্পাদক নূর নবী মিরন, কণ্ঠনীড় আবৃত্তি সংগঠনের সভাপতি সেলিম রেজা সাগর, নিরাপদ সড়ক চাই’র সাধারণ সম্পাদক শফিক আহমদ, প্রদীপ খাস্তগীর উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, ২৮১ কোটি টাকা ব্যয়ে চট্টগ্রাম নগরের কে সি দে রোডে মুসলিম ইনস্টিটিউট হল ভেঙে একটি সাংস্কৃতিক কমপ্লেক্স বা সাংস্কৃতিক বলয় নির্মাণ করছে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়। ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে এর কাজ শুরু হয়। এ প্রকল্পের অধীনে আছে, মুসলিম ইনস্টিটিউট হল ও পাবলিক লাইব্রেরির অংশের পুরনো স্থাপনা ভেঙে ১৫ তলা গণগ্রন্থাগার ও আটতলা অডিটরিয়াম ভবন, চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার সংস্কার, ২৫০ জন ধারণক্ষমতার একটি উন্মুক্ত গ্যালারিসহ মুক্তমঞ্চ, ক্যাফে ও ছোট জাদুঘর