রহিম উল্লাহ উপল।
কক্সবাজারের টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ ও হোয়াইক্যং সীমান্তে নাফ নদের ওপারে মিয়ানমার থেকে ফের গোলাগুলির শব্দ আসছে। ফলে এপাড়ে টেকনাফে চিংড়ি চাষিদের ভয়ভীতি কাটছে না।
বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) রাত থেকে শুক্রবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) বিকাল ৫টা পর্যন্ত গোলাগুলির শব্দ শুনতে পান সীমান্তের লোকজন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে টেকনাফের হোয়াইক্যং ইউনিয়ন পরিষদের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোহাম্মদ আলম বলেন, ‘গত রাত থেকে সকালে জুমার নামাজের আগ পর্যন্ত থেমে থেমে খারাংখালী সীমান্তে গোলার শব্দ পাওয়া গেছে। ফলে সীমান্তের কাছাকাছি চিংড়ি প্রজেক্টের থাকা লোকজন ভয়ে নিরাপদে এসেছেন। তবে আগের তুলনায় গোলার শব্দ অনেকটা কমেছে।’
হোয়াইক্যং বেড়িবাঁধের কাছাকাছি প্রজেক্টে বসবাসকারী দানু মিয়া (৬৪) বলেন, গত রাত থেকে মিয়ানমার থেকে গোলাগুলির শব্দ পাওয়া যাচ্ছে। শুক্রবার সকালে কয়েকবার গোলার বিকট আওয়াজ পেয়ে বিজিবির চৌকির কাছাকাছি দৌড়ে চলে এসেছি। সীমান্তের ওপারে এখনও সে দেশে যুদ্ধ চলমান রয়েছে। ফলে সেখান থেকে এখনও গোলার বিকট শব্দ পাচ্ছি।
আগের তুলানায় সীমান্তে গোলার শব্দ কম উল্লেখ করে হোয়াইক্যং ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান নুর আহমেদ আনোয়ারী বলেন, খারাংখালী সীমান্তের নাফ নদের ওপারে গুলি, মর্টার শেল বিস্ফোরণের বিকট শব্দ শুনতে পান লোকজন। গত রাত এবং সকালে মিয়ানমার থেকে এপারে গোলার শব্দ পাওয়া গেছে।
এদিকে, মিয়ানমারের রাখাইনে চলমান সংঘর্ষের গোলাগুলির শব্দ শাহপরীর সীমান্তে শোনা গেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। ফলে এখনও বাসিন্দাদের আতঙ্ক কাটেনি।
শাহপরীর দ্বীপ সীমান্তের স্থানীয় জেলে আব্দুল গফুর বলেন, আজকে মিয়ানমারে গোলাগুলি শব্দ পাওয়া গেছে। সকাল থেকে কয়েকটি মর্টার শেলের বিকট শব্দ শোনা যায়।
একই কথা বলেছেন শাহপরীর দ্বীপ বেড়িবাঁধের সৈয়দ আলম। তিনি বলেন, সকালে মিয়ানমার থেকে কয়েকটি গোলার শব্দ পাওয়া গেছে। তবে এটা অন্যদিনের তুলনায় অনেকটা কম।
তবে জেটিঘাটে দোকানি মোহাম্মদ সেলিম বলেন, শাহপরীর দ্বীপে নাফ নদ শান্ত রয়েছে। গত কয়েক দিন ধরে মিয়ানমারের গোলার শব্দ পাওয়া যায়নি। তবে এখন পর্যন্ত দ্বীপের জেটিতে চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে।
ওপারে চলমান জান্তা সরকারের সঙ্গে বিদ্রোহী সশস্ত্র সংগঠন আরাকান আর্মির মধ্যে যুদ্ধ বন্ধ না হওয়ায় অনুপ্রবেশের শঙ্কায় বর্ডার গার্ড বিজিবি ও উপকূলীয়রক্ষী বাহিনী কোস্ট গার্ড সদস্যরা নাফ নদে টহল জোরদার অব্যাহত রেখেছে।
এ বিষয়ে কোস্ট গার্ড চট্টগ্রাম পূর্ব জোনের মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেনেন্ট তাহসিন রহমান বলেন, ওপারের চলমান যুদ্ধের পরিস্থিতিতে নাফ নদ শাহপরীর দ্বীপ সীমান্তে অনুপ্রবেশের সম্ভাবনা থেকে আমরা (কোস্ট গার্ড) নাফ নদে টহল জোরদার রেখেছি। নতুন করে কাউকে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। আমর ইতিমধ্যে দুই শতাধিকের বেশি অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গাকে প্রতিহত করেছি।